মেঘদূত সংখ্যা।। কবি শম্পা সামন্তের মুক্তগদ্য - শৃণ্বন্তু মেঘদূত সংখ্যা।। কবি শম্পা সামন্তের মুক্তগদ্য - শৃণ্বন্তু
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৩ অপরাহ্ন

মেঘদূত সংখ্যা।। কবি শম্পা সামন্তের মুক্তগদ্য

আপডেট করা হয়েছে : রবিবার, ২১ জুলাই, ২০২৪, ৭:০৭ অপরাহ্ন
মেঘদূত সংখ্যা।। কবি শম্পা সামন্তের মুক্তগদ্য

মেঘদূতম

তোমার সীমানা জুড়ে কলরব। তোমার কামনা জুড়ে মন খারাপের রঙ। আমার জানালা ভেঙে ওগো সাবলীল মেঘ! তুমি জটিল হয়ো না। ওহে মেঘ! ক্লান্ত, শ্রান্ত মেঘ! কত ব্যথা ভুলে তুমি নিচে আসো। 

আজ আমার বুকের ব্যথা ভোলবার উপশম নেই।

ব্যথাতুর অলকাও যেন দূরতর অভীপ্সা।

বর্ষা! তুমি মেঘ হতে জানো বুঝি? বৃষ্টি হতে? সমস্ত আবরণ মোচন করে গতিময় ঢালু পাহাড়ের কোল বেয়ে নিয়ে আসো অনন্ত আদর? আমি সেই নির্বাসিত প্রেমিক।

তুমি জানোনাকো, কতটা ভালবাসা রেখেছি তাহার স্তনাগ্রে। জানো মেঘ! দাড়িম্বের ওষ্ঠাধরে রেখে এসেছি সোহাগ। কতটা সমুদ্র সেঁচে  সেঁকে নিচ্ছি তপ্ত ওম।

এই ভালবাসা বিষাদের নদী। এই অপেক্ষাও দীর্ঘ দীর্ঘতর প্রেম। এ যেন অন্ধত্ব, যেন বধিরতা। আমি এই বিষাদের নদীতে ডুবে আছি প্রিয় মেঘ। জলদ গাম্ভীর্য মেখে সানুদেশে পড়ে আছে অভিমান।

দ্যাখো দ্যাখো কী চমৎকার ঢেউ লেগে কেঁপে ওঠে জলের আগুন! দৈবে কোন ঈশ্বরীয় গর্ভ থেকে নিষ্ক্রান্ত এ দৈন দশার মহরত।

জানিনা, এই আহত প্রেমের আকাশে কোনো অভিসার আছে কিনা।

হয়তো বিস্তৃতির অন্তরালে কোথাও লুকিয়ে আছে অনন্ত প্রত্যাশা যুগ যুগান্তর। যক্ষপুরীতে কি সেই মেঘেদের যাতায়াত?

হয়তো সেই বিষয়ীকে পেতেই মানুষের লম্বা দৌড়।

নিজে না পারলেও ছিল মেঘের লেফাফায় নিজেকে সঁপে দেওয়া।

জানি আমি অপেক্ষারও কোনো কালক্ষেপ নেই।মৃত্যুও না। যাও মেঘ যাও। অনাদি অতীত তুমি গোপনে গোপনে শুধু আমার কুশলটুকু দিয়ো তাকে। যেখানে তোমায় দিয়েছি একটি বিচ্ছেদের নীল খাম। কাল সারারাত্তির চুমো এঁকেছে পাতার উপর।

দিয়ো তার লাল অস্তরাগে। তার পায়ের পাতায় নিবেদন অন্তরঙ্গ সমূহ নিবেদন। অবান্তর ছেঁড়া পাতাদের উড়িয়ে বাগানে যে আলো জ্বেলেছ সেখানে অপেক্ষার পায়চারী এনে দিচ্ছে দুর্লঙ্ঘ অসূয়া।

দ্যাখো দ্যাখো সপ্তকে লেগেছে সুর। পরম প্রিয়র দ্বৈরথে নিমজ্জিত কৌঞ্চকৌঞ্চি। সেই পরম অনুভব।

যে ক্ষণে অলঙ্ঘ পর্বত ও পেরোনো যায়, সেই মহার্ঘ্য ক্ষণ ও এনে দেয় আকূল বিরহ।

মন বলে যেতে নাহি দেব, কিন্তু হায়, যেতে দিতে হয়।

অলক্ষ্যে ঈশ্বর হাসেন। প্রেমের হাহাকার ধ্বনিত হয় আকাশের ক্রন্দন রোল।

তুমি যাও মেঘ। বলো তাকে তার যক্ষ দীর্ঘ দীর্ঘ নি:শ্বাসে বিবস্বান। এই সেই চাঁদ দেখে চাঁদমুখ মনে পড়ে।

তুমি কালো কেশে জড়িয়ে নিও আদর। মুর্ছিত বেদনা রেখো তুলসীমঞ্চে। এই প্রণয় বিলীন হোক ঈশ্বরীয় কনায়।

কবি-সম্পাদক: শম্পা সামন্ত


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগ থেকে আরোও
Theme Created By FlintDeOrient.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!