ফিরে পড়ার কবিতা
ঘোড়সওয়ার
জনসমুদ্রে নেমেছে জোয়ার,
হৃদয়ে আমার চড়া।
চোরাবালি আমি দূরদিগন্তে ডাকি—
কোথায় ঘোড়সওয়ার?
দীপ্ত বিশ্ববিজয়ী! বর্শা তোলো।
কেন ভয়? কেন বীরের ভরসা ভোলো?
নয়নে ঘনায় বারে-বারে ওঠাপড়া?
চোরাবালি আমি দূরদিগন্তে ডাকি?
হৃদয়ে আমার চড়া?
অঙ্গে রাখি না কারোই অঙ্গীকার?
চাঁদের আলোয় চাঁচর বালির চড়া।
এখানে কখনো বাসর হয় না গড়া?
মৃগতৃষ্ণিকা দূরদিগন্তে ডাকি?
আত্মাহুতি কি চিরকাল থাকে বাকি?
জনসমুদ্রে উন্মথি’ কোলাহল
ললাটে তিলক টানো।
সাগরের শিরে উদ্বেল নোনা জল,
হৃদয়ে আধির চড়া
চোরাবালি ডাকি দূরদিগন্তে ,
কোথায় পুরুষকার?
হে প্রিয় আমার, প্রিয়তম মোর!
আযোজন কাঁপে কামনার ঘোর,
অঙ্গে আমার দেবে না অঙ্গীকার?
হালকা হাওয়ায় বল্লম উঁচু ধরো।
সাত সমুদ্র চৌদ্দ নদীর পার—
হালকা হাওয়ায় হৃদয় দু-হাতে ভরো,
হঠকারিতায় ভেঙে দাও ভীরু দ্বার।
পাহাড় এখানে হালকা হাওয়ায় বোনে
হিমশিলাপাত ঝঞ্ঝার আশা মনে।
আমার কামনা ছায়ামূর্তির বেশে
পায়ে-পায়ে চলে তোমার শরীর ঘেঁষে
কাঁপে তনুবায়ু কামনায় থরোথরো।
কামনার টানে সংহত গ্লেসিআর।
হালকা হাওয়ায় হৃদয় আমার ধরো,
হে দূর দেশের বিশ্ববিজয়ী দীপ্ত ঘোড়সওয়ার!
সূর্য তোমার ললাটে তিলক হানে
নিশ্বাস কেন বহিতেও ভয় মানে!
তুরঙ্গ তব বৈতরণীর পার।
পায়ে-পায়ে চলে তোমার শরীর ঘেঁষে
আমার কামনা প্রেতচ্ছায়ার বেশে।
চেয়ে দেখে ঐ পিতৃলোকের দ্বার!
জনসমুদ্রে নেমেছে জোয়ার—
মেরুচূড়া জনহীন—
হালকা হাওয়ায় কেটে গেছে কবে
লোকনিন্দার দিন!
হে প্রিয় আমার, প্রিয়তম মোর,
আযোজন কাঁপে কামনার ঘোর।
কোথায় পুরুষকার?
অঙ্গে আমার দেবে না অঙ্গীকার?