যে জীবন চলে যাবে
আসাদুজ্জামান
যে জীবন নাম নকশা মুছে দিয়ে চলে যাবে, তাঁর হাতে কি দিয়েছ তুমি,
কেন মিছিমিছি এতটা লড়াই খেললে নিজের সাথে।
যে স্বপ্নের ভুবন চেয়েছিলে
পেয়ে গেলে কি করতে তুমি ?
বড়জোর আরো কিছুদিন ঘুমিয়ে থাকতে
বড়জোর আরো কিছুদিন এই মাটির মায়ায়
মেঘের আকাশ থেকে
পেড়ে আনতে বৃষ্টির ফোঁটা।
হয়ত বা আরো কিছুদিন
প্রিয়ার বুকের প্লবতায় ভেসে ভেসে
অবশেষে ডুবে যেতে।
নষ্ট নৌকার মত দিশাহীন অন্ধকারে
এখানে ওখানে ঘুরে ঘুরে, থেমে যেতে
কোন এক চরের কিনারে।
যে জীবন চলে যাবে তাঁর উপর কিসের অধিকার ??
ফুল ফোটে ঝরে যায়,
বাতাসে সুগন্ধ রেখে যায়,
গাছেরাও বেড়ে ওঠে, ছায়া দেয়
কাঠঠোকরা ছিদ্র করে বুকের পাঁজর।
পত্রহীন গাছের প্রশাখায়
পাখিদেরও সংসার ভেঙে যায়।
যে জীবন চলে যাবে, তুমি তাকে তাড়িয়ে দেবার কে ?
সূর্যগ্রহণের কালে মাঠ মাটি
তারকার আলো খোঁজে,
গবাদি পশুরাও ক্ষুধা ভুলে আশ্রয়ের দিকে দৌড়ায়,
কারো জন্য কেউ আর অপেক্ষা করে না।
তুমি কার জন্য দাঁড়িয়ে আছো পথে ?
জীবন কারো থাকে না চিরদিন,
চলে যাবার আগে কোন ছোটখাটো বাহানা বানায়,
ভালোবাসায় যদি কিছু হারিয়ে যায়,
আবার ভালোবাসো, কে জানে কাল কি ঘটবে জীবনের পথে,
যে জীবন চলে যায়, তাঁর ভালোবাসা
থেকে যায় পৃথিবীর আকাশে বাতাসে।
যে জীবন চলে যাবে তার খোঁপায় গুঁজে দাও জোৎস্নার ফুল,
রাত্রি গভীর হলে তুমি কারো রাজা কিংবা প্রজা নও কোনভাবে,
যারা সারারাত জাল বোনে,
চুরি করে কবরের মাটি,
তাদের জন্যও বন্ধ থাকে দিনের আদালত।
যে জীবন চলে যাবে তুমি তার হাতে রাখো
ভরসার হাত।