পাহারাদার ও চোরের মা - শৃণ্বন্তু পাহারাদার ও চোরের মা - শৃণ্বন্তু
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৩ পূর্বাহ্ন

পাহারাদার ও চোরের মা

আপডেট করা হয়েছে : বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪, ১:৫৪ অপরাহ্ন
পাহারাদার ও চোরের মা

সাধন দাস

তস্করপুরে সবাই চোর। চোর মানেই মিথ্যুক।
ন্যাড়ানাথ নাকি কিপটে!
চোর কাম মিথ্যুকদের নিয়ে ন্যাড়ার মাথা গরম। তস্করপুরে কেউ, কিছুতেই স্বীকার করে না, হাওয়া বাতাস খেলবে তাই কদমবাবা (কদম ছাঁটের বাবা) ছাঁট। লোকে বলে তেলকম ছাঁট। দিনেরাতে চোদ্দবার গামছা ভেজায়, মাথায় দেয়, তবু গরমে ঘুম আসে না।
তস্করপুরে চোদ্দগুষ্টি চোর। মেজোভাইকে রেখেছে দিনের পাহারায়। সেজোভাইকে রাতে। সবকটা ফাঁকিবাজ, ধান্দাবাজ। ছোটোভাইকে রেখেছে দুই পাহারাদারকে পাহারা দিতে। দুই পাহারাদারকে বলেছে, ছোটোকে চোখে চোখে রাখিস।
বৌ, ভাদ্দরবৌ, ছেলে, মেয়ে, ভাইপো, ভাইঝি সব হাড়ামির হাড়, চোরস্য চোর। ফাঁক পেলেই হাত চালাবে। সব্বাইকে নিজে পাহারা দেয়।
ঘরে দিনরাত হেরিকেন রেডি রাখে। একটা মেঝেয়, একটা আড়ায়। হেরিকেনের বোগলে দেশলাই গুঁজে রাখে। শুয়ে স্বস্তি নেই। পায়ের কাছে দরোজার হুড়কো, মাথার কাছে রামদা, হাতের কাছে নাইট্রিক এ্যাসিডের বোতল।
বন্ধকি কারবারে মুশকিল, পরের জিনিস পাহারা দিতে হয়।
হুম, খুট শব্দ হলো। চোর। দরোজা খুলেছে। আলবাত চোর। কী আস্পর্দা! পাঁচিলে ভাঙাকাচ। বাগানে গর্ত, লতাপাতায় ঢাকা ফাঁদ। দরোজার মাথায় ঘন্টা নামানো। কী করে ঢুকলো? খতরনাক চোর।
বাছাধন ফাঁদে পা দিয়েছে। এসপার কি ওসপার! ন্যাড়া নিঃশব্দে উঠে পড়ে। হাতে এ্যাসিডের বোতল। খতরনাক, কাছে যাওয়া চলবে না। দূর থেকে ঘায়েল করতে হবে।
বস্তা ভরা কাঁসা। ওঘরে কেউ নেই। বাক্স ভর্তি সোনা। সিন্দুক বন্ধ। ওখানেও কেউ নেই। ব্যাটা ঘাপটি মেরেছে। দরোজার আড়ালে, দেওয়াল সেঁটে দাঁড়িয়ে যায় ন্যাড়া।
ওইতো হুড়িমুড়ি দিয়ে গুটিগুটি ঢুকছে। শালা, চোরের সাতদিন কি গেরস্থের একদিন! মার এ্যসিড ছুঁড়ে। দ্যাখ ঠেলা কাকে বলে!
সঙ্গে সঙ্গে আর্তনাদ।
-খোকা আমি, তোর মা।
তস্করপুরে সবাই মিথ্যুক। মা মিথ্যে কথা বলছে। ওটা মা নয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগ থেকে আরোও
Theme Created By FlintDeOrient.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!