লেখিকা ময়মনসিংহ। বাংলাদেশের বাসিন্দা:
তখন আমি সবে মাত্র সিক্সে,
ভোর রাতে জ্বর উঠল খুব করে।
বুকের দুপাশে ব্যথা চিনচিনে,
দৌড়ে গেলাম ছোট কাকার ঘরে
কাকা কাকা দেখো কেমন যেন,
ফুঁড়া হয়েছে দুটো, বুকের উপরে।
কাকা চোখ টিপে হাসে,
মোলায়েম করে অঙ্কুরিত স্তন দুটো
দু’আঙ্গুলের নির্মম ডগায় দিলো টিপে…।
তারপর, এখানে- সেখানে ভীড় ঠেলাতে
যে যেভাবে পারে স্তন দুটো দেয় চটকে।
যেন গরম ভাতে খাবে বলে, সেদ্ধ আলু নিচ্ছে চটকে।
গত বৈশাখে বড়োদিদির বিয়েতে নতুন জামাইবাবু
অষ্ট মঙ্গলায় এলেন আমাদে বাড়িতে।
শুনেছি জামাইবাবু, খুব ধনী আর শিক্ষিত, মার্জিতও বটে।
ভোর রাতে কেমন বীভৎস এক অস্বস্তিতে
আমার ঘুম ভাঙে:
চোখ মেলে দেখি, আলো-আঁধারিতে,
জানি কারো বিশ্বাস হবে না! আমার কথাতে-
নতুন জামাইবাবু! তার ডান হাতটি ঢুকিয়ে দিলো,
আমার হাফ প্যান্টের ভিতরে।
আমাকে চোখ মেলতে দেখেই খুব শক্ত করে ধরল মুখটি চেপে,
রক্ত আঁখি তার শাসায় আমাকে।
যদি মুখ খুলিস, তবে দেখে নেবো তোকে…
আর বলা হয়নি কাউকে, মাঝে মাঝে ঘুম ভাঙে মাঝরাতে,
মনে হয় কে যেন, আমার পাজামাটি একটানে খুলে ফেলছে…
ঘুম ভাঙে, দেখি কেউ নেই চারিদিকে।
কী এক দুঃসহ ট্রমায় ক্ষয় হয় আয়ূ
চোখের জলে ভেজে আদ্র জীবনের জলবায়ূ।
এভাবেই দিন কাটে, রাত কাটে
কলেজের বায়োলজির সৌমিত্র স্যার।
একদিন উনার ডেস্কে ডাকেন;
পিশাচের হাসি হেসে বলেন, “এই ভাবে
যদি ফেল করতে থাকো,
মেডিক্যালে পড়া এ জন্মে কি হবে?
তোমার বাবাকে বলো, আমি উনাকে ডেকেছি।”
বাবা কলেজ থেকে ফিরলেন মুখ তার থমথমে,
শুনে বাবা বেদম মারলেন সেই রাত্রে।
স্যারের কাছে টিউশন নিতে পাঠালেন জোর করে,
মাস তিনেকের মাথায়, প্রেগ্ন্যান্সির ট্রীপে ফুটে উঠে টকটকে লাল দুটি দাগ..
মা মুখে আঁচল চেপে ডুকরে ডুকরে কাঁদে।
মফস্বলের কোন এক অখ্যাত ম্যাটারনিটি ক্লিনিকে,
নবজাতকের ভ্রুণ এলাম ছুঁড়ে।
ছুঁড়ে এলাম নারী সত্ত্বা, ছুঁড়ে এলাম
সুখ স্বপ্ন, মানুষ হয়ে বাঁচার অধিকার।
ফিরে এলাম নারী হয়ে, দেহ নয় যেন
একটাল রক্ত মাংসের স্তুপ।
একদিন সন্ধ্যায়, ছাদের কোণে,
তিনতলার নিমু, কাঁদছে ফুঁপিয়ে।
আমাকে দেখে ভয়ে জড়োসড়ো,
বললাম কী হয়েছে রে নিমু?
এই ভর সন্ধ্যায় কাঁদছিস ডুকরে?
কাঁদো কাঁদো গলায় বলে,
দিদি, যদি বলো মাকে, মা আমাকে মারবে,
আমি বললাম, কিচ্ছুটি বলবো না কাউকে।
বল্ কেন কাঁদছিস, এমন করে?
দিদি আমাকে দুতলার পলাশদা চকোলেট দেবে বলে,
রোজ দুপুরে ডাকে তার ঘরে
আজও ডেকেছে, আমি গিয়েছি।
বাসায় কেউ ছিলো না, তাদের
একা বাড়িতে জাপ্টে ধরে।
হাফ প্যান্ট খুলে, আমাকে নিয়ে যায় বিছানায়।
কী ব্যথা করছে, দিদি জানো?
রক্ত ঝরছে তখন থেকে।
নিমুর মা- বাবা আজ হবে
বছর তিনেক ফ্ল্যাট বিক্রি করে
হারিয়েছে, নিরুদ্দেশে।
পলাশদা আজ সেলিব্রিটি, পাড়ার সবার করে দেখভাল,
এবার নাকি নির্বাচনে দাঁড়াবে,
পাড়ার লোকেরাও চাইছে তাই,
এভাবেই কত নিমুর স্বপ্ন, অঙ্কুরে হচ্ছে ছাই।
এই হয়তো বা নারীর জীবন চক্র রচেছে বিধাতা,
বুক ফেটে গেলেও মুখ ফুটে বেরুবে না রা।
এভাবেই ভীড় ঠেলাতে স্তনে, নিতম্বে
হাত চলে হাজারে ,হাজারে,
একটা সময় অভ্যেস হয়ে যায়;
প্রেমিকের হাতের স্পর্শেও আর শিহরণ জাগে না।
বাসর রাতেও দেহমনে কাঁপন উঠে না।
বাসে, ট্রামে, রাস্তায়, স্কুলে, হাসপাতাল কিংবা উপাসনালয়ে
কোথায় নারীর নিরাপত্তা মেলে?
যেখানেই যাও সেখানেই মাংস-খেকো পিশাচের দল
দুমড়ে মুচড়ে নিংড়ে ফেলে।
যেন নারীদেহ এক মাংসপিণ্ড বৈ কিছু নয়।
যে পিশাচ যত নারীকে খুবলে খুবলে খাবে
সে পিশাচ পুরুষ সমাজে তত মূল্যায়িত হবে।
শুনরে ওরে ও পিশাচ, শুনরে নারীখেকো
হায়েনার দল।
যেমন করে চেটেপুটে খাচ্ছিস অন্যের মা- বোনকে
তেমন করেই আরেক হায়েনা লুটেপুটে
নিচ্ছে তোর মায়ের সতীত্বকে।।
এ জগতে কাপুরুষই সুযোগ পেলেই
মারে ছোবল।
যে বন্ধুর কাছে করছিস নারীকে যৌন হয়রানির বীরগাথা বর্ণন।
সেই বন্ধুর ২ মাসের ভ্রুণ
তোর আদরের বোনটি করছে এ্যাবরশন।
যে মায়ের বুকের আঁচলে খুঁজিস তুই স্নেহ অতল
সেই মায়ের স্তন জোড়া মাছ-বাজারে তোরই মতো কোন
নারীখেকো করছে মন্থন।
অন্যের মেয়ে, মা, বোন, পরস্ত্রী যেমন
ভোগ্যবস্তু
তোর শ্রদ্ধা-স্নেহের মা, বোন, স্ত্রীও কারো চোখে
কামনার মাংস স্তূপ।
তারাও জ্বলে, অঙ্গার হয়,
শুধু সামাজিক নির্যাতনের ভয়ে নিথর, নিশ্চুপ।
যে যৌনতার কাছে পুরুষ নারী উভয়েই সমান, কামুক পুরুষ যেমন নারী দেহ লোলুপ, নারীও কি তা নয়? তবে কেন শুধু পূরুষের দোষ খোঁজা হয়? নারী শরীর ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন যতটা দক্ষতায়, পুরুষের দেহকেও ঠিক সেভাবেই, নগ্ন নারী শরীর দেখলে যেমন পুরুষ কামনায় জ্বলে মরে নগ্ন পুরুষ দেখলে কি নারী কামতারিত হয়না, আপনার লেখায় নারীবাদী সত্ত্বা ফুটে উঠলো লেখাটা একপেশে মনে হলো, পরবর্তীতে আশা করছি পুরুষের এধরনের মনস্তত্ত্ব আপনার লেখায় ঝরে পরবে, ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন, পুরুষ ছাড়া নারী যে অসম্পূর্ণ সেটা বুঝবার চেষ্টা করুন, আমি আপনার লেখার একজন গুনমুগ্ধ ভক্ত তাই বলতে সাহস পেলাম, ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় সারাজীবন।
পাশ্চাত্যের কালচার, বাঙ্গালী কালচার ভিন্ন। ধর্মীয় দৃষ্টিতে পুরুষ ও নারীর দৃষ্টি সংযত করে চলাফেরা করতে বলা হয়েছে। অত্র কবিতায় পুরষের হিংস্রতাকে এককভাবে দায়ী করা হয়েছে। প্রকৃতিতেও সৃষ্টি আর ধ্বংসের খেলা। ধন্যবাদ কবিকে পুরুষের উলঙ্গ চেহারা তুলে ধরার জন্য।
সুন্দর লেখেছেনে, ধন্যবাদ