নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার (আংশিক) বিশ্লেষণ।। মোহিত কামাল।। বাংলাদেশ - শৃণ্বন্তু নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার (আংশিক) বিশ্লেষণ।। মোহিত কামাল।। বাংলাদেশ - শৃণ্বন্তু
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০২ পূর্বাহ্ন

নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার (আংশিক) বিশ্লেষণ।। মোহিত কামাল।। বাংলাদেশ

আপডেট করা হয়েছে : সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪, ১২:১৯ অপরাহ্ন
নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার (আংশিক) বিশ্লেষণ।। মোহিত কামাল।। বাংলাদেশ

নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার (আংশিক) বিশ্লেষণ: মোহিত কামাল

লেখক: মোহিত কামাল

কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত অতুলনীয় “বিদ্রোহী” কবিতার অংশবিশেষ :
“আমি  উত্থান, আমি পতন, আমি অচেতন-চিতে চেতন,
আমি  বিশ্ব তোরণের চরণে বয়ে বৈজয়ন্তী মানব-বিজয়-কেতন।
ছুটি   ঝড়ের মতন করতালি দিয়া
স্বর্গ মর্ত্য-করতলে,
তাজি  র্বোরাক্ আর উচ্চৈঃশ্রবা বাহন আমার
হিম্মত-হ্রেষা হেঁকে চলে!”
‘অচেতন-চিতে চেতন’ ―কী নান্দনিক বিজ্ঞান! কী প্রত্যয়দীপ্ত শৈল্পিক ঘোষণা! তাঁর আমিত্বের অচেতন মন ঘুমিয়ে নেই। সদা জাগ্রত, মানবকল্যাণ চিন্তায় সবসময় চেতন অর্থাৎ অচেতন-চেতন মনকে তিনি ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় একাকার করে দিয়েছেন, জনগণকে অচেতনে না-থেকে সদা জাগ্রত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন! তাঁর এই আহ্বান শুধু ব্রিটিশ-ভারতবর্ষের জনগোষ্ঠীর জন্য নয়, সব যুগের বঞ্চিত-লাঞ্ছিত-শোষিত মানুষের আমিত্বের চৈতন্যজাগরণের উৎস, উদাহরণ। অর্থাৎ ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ‘আমি’ কেবলই নজরুলের আত্মশক্তির একক ‘আমি-সত্তা’ নয়। এই ‘আমি’ সর্বযুগের সর্বকালের বিশ্বের প্রত্যেক অঞ্চলের নিপীড়িত মানুষের ‘আমি’; সচেতন করে-তোলা গণসমুদ্রের ‘আমি’; আর নজরুল কেবল আবেগের ঝড়ে তাঁর কাব্যে ‘আমি-সত্তা’ উড়িয়ে দেননি; এই ঝড়ের মধ্যে তাঁর মনস্তত্ত্বের সৃষ্টিশীল কল্পনা তথা মেধা ও জীবনবোধের উজ্জ্বল, অনন্য ‘নজরুল-সত্তা’-র ও উদ্গীরণ ঘটে গেছে। একই সঙ্গে তাঁর সাহিত্যে সংযোগ ঘটেছে বিভিন্ন সাহিত্য মতবাদ ও মনস্তাত্ত্বিক মতবাদেরও; আর এ-কারণে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা শিল্পগুণে অসাধারণ; শতবর্ষ পরেও প্রাসঙ্গিক হয়ে আছে, যুগে-যুগে সর্বকালের, সব দেশের, সব সমাজের নিপীড়িত পরাধীন মানুষের মুক্তির সনদ হিসেবে প্রাসঙ্গিক থাকবে। এসব কারণে নজরুলকে চৈতন্যজাগরণের সমাজ-মনস্তত্ত্ববিদও বলা যায় বটে। (‘বিদ্রোহী কবিতায় মনস্তত্ত্ব’; মোহিত কামাল; স্বপ্ন’৭১ প্রকাশন; পৃ.৫২)
চৈতন্য বা বোধোদয়ের সংজ্ঞার মধ্যে আমরা যে-শক্তি বা উদ্দীপনার কথা জানি নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মধ্য দিয়ে সেই শক্তির বিকিরণ কালজয়ী হয়ে আছে, যুগচৈতন্যজয়ী হয়ে হিমালয় চূড়ায় উঠে বসে আছে।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিটি এঁকেছেন: Aloptogin Tushar
নজরুলের পড়াশোনা নিয়ে যারা কথা বলতে চান, তাদের জীবনবোধের গভীরতার ভেতর থেকে ওই শিখর হিমাদ্রির আলোর ছোঁয়া পেতে হবে। তাহলে তাদের চোখ খুলে যাবে।
নিজেদের অজ্ঞতা আর অন্ধকার জগতে কিছুটা হলেও আলো ছড়াতে পারবেন।
☆[লেখকের অনুমতি সাপেক্ষে মুদ্রিত। ছবি ও লেখা কপিরাইটের অন্তর্ভুক্ত।]


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগ থেকে আরোও
Theme Created By FlintDeOrient.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!