কবিতা: সোনার দাসী
কবি শম্ভু রক্ষিতের কবিতা :
সোনার দাসী
অনেক দূর দেশ ঘুরে আমার সোনার দাসী আসে
আমি সংক্ষিপ্ত গলিপথ থেকে ঘরে কোলে করে নিয়ে আসি তাকে।
সোনার দাসী,যাকে প্রজাপতির মত দেখতে-
আমি চোখ বুজে শুঁকি যার টকটকে লাল সিল্কের জামা,গর্ভের শিরা
যার শুকনো অল্প চুল মাথার ওপর দুভাগ হয়ে
আমার কানের পাশে জটার মত ঝোলে।
আমার ঘরে লোহার খাট,জামাকাপড় রাখার দেরাজ
দেয়ালের মধ্যে মার্বেল পাথর বসানো কয়েকটা ড্রয়ার
এবং আখরোট কাঠের ওপর খোদাইকাজ করা ছোট্ট একটা টেবিল
যেন স্মৃতিস্তম্ভ হয়ে থাকে।
আমি অবৈধ কার্পেট পুঁথি,ছেঁড়া কাপড় সোনার দাসীকে পরাই।
আমি হেসে তার সঙ্গে কথা বলি,তার জন্য আমার নিশ্বাস,
আঙ্গুলের সাদা হাড় তাকে দেখাই,তার জন্য আমার জলস্তম্ভ
এবং আমার জন্য তার দ্বিতীয় সত্তা অনেক দূরে চলে গেছে।
আমি সোনার দাসীর মনের কথা চিন্তা করি,সগর্বে উদাসীন হই
ফলে সোনার দাসী ঘরের ভেতর থেকে বেরিয়ে পড়ে
বায়ুমণ্ডলের মতো তাকে মনে হয়
সে রঙিন বাদ্যযন্ত্র ও টুপি নিয়ে আমার সঙ্গে আমার সঙ্গে লড়াই লড়াই খেলে
আমি দেখি তার দীর্ঘস্পন্দিত খেলা,দীর্ঘ অঙ্গসঞ্চালনও করি
সোনার দাসীর অনুপক্রীড়ায় এখন আমার মূর্ত শরীর-
আমার ও সোনার দাসীর খেলা দেখে নিরাবরণ বুড়িরা উঁচুবাড়ি থেকে
বেরিয়ে আসে,সোনার দাসীকে তারা দয়াময়ের বাতাস দিতে থাকে
তাকে ঘিরে ধরে পাথরের পতগ লাগানো ওদের গুলবদন সম্ভ্রম।
চতুর্দিক দেখা বারুদের মতন সোনার দাসী শীতল মনে হাই তোলে
তার নিহিত চোখের ভেতর হতে অনর্গল রশ্মিকণা আসতে থাকে
তার জালি চোখ,উত্তপ্ত লাল ঠোঁট-ঝালর লাগানো স্মৃতি-
তার শরীরে আমার বেদনা মাখানো গন্ধ
আমি ও সোনার দাসী আমরা দুজনে এখনও স্পষ্ট,স্ফীত
আহরিৎ কাঠের সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে যাই প্রায়ই নিচে।