শম্পা সামন্ত
বাতাস ক্লান্ত হলে ফুরিয়ে যায় লেনদেন জীবনের।কিন্তু সে ভোলে না ভালবাসতে। ভোলে না জড়িয়ে রাখতে চূড়ান্ত আদর।
সেই আদরে ছাতিম ফুলের গন্ধ।এই হারিয়ে যাওয়ার নিষেধে শূন্যতার বীণা বাজে।আর অনিবার্য বৃষ্টি শেষে আগমনীর সুর বাজে। উৎসব সেজে ওঠে সমারোহে।
এই সেই আলো উজ্জ্বল। দ্যাখো তার নিচে নি:সীম অন্ধকার সামাজিক। আমি ঘনিষ্টতার মানে জানি। জানি তন্বিষ্ট শরীর। আদরের উদযাপনের মুহূর্তে হাঁ-মুখের সরিয়ে রাখি নির্ভরতা। সর্বাঙ্গে স্রোত এলে নৌকা বাইতে জানি। সমস্ত জলাভুমি ব্যাপি শুকনো হৃদয় পেতে আর একবার ঘন বর্ষণ কামনা করি। কথার বাঁধ ভেঙে সমস্ত অনিয়ম ডাকি। আমি তখন পর্দার আড়ালে বাৎসায়ন পড়ি। আমার একনিষ্ঠ বনেও দাবানল।
মনে হয়, সত্যিই কী হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে অগ্নিশিখায়? ছারখার? পৃথিবীর আসন্ন দূর্যোগে?
হারিয়ে যাচ্ছি কী প্রত্ন লিপির সিন্ধু সভ্যতায় একদিন? একদিন যেখানে সুললিত তনু ছিল।ছিল সুনিবিড় আলিঙ্গন ছায়া। কনক চাঁপার আঙুল নির্মিত আলপনা ছিল নির্ভার।
কোনো এক গুহা গর্ভান্তরে বাহিত বাতাস কথা বলত ফিসফাস। ভুলে কি গেছি সেই যাপন মধু?সব কিছু তুলে রেখে চলে যাচ্ছি একা। তাই একাকীর সঙ্গবাস।
চমকের বিগলন পূড়ে যেতে যেতে চারিদিক নি: স্ব নিরীশ্বরতায় ভরিয়েছি ব্যায়ভার? এ সময়ের মতো, এই নিস্তরঙ্গ বাতাসের মতো ক্লান্ত পরাজিত ভিক্ষাপাত্র হাতে ছিন্ন মধুকর।
এই দ্যাখো কেমন গুছিয়ে রেখেছি অগোছালো সংসার। নাম রেখেছি কোমল প্রতীক্ষা। যতখানি নিবিড়তা চেয়ে তুমি নিবিড় হতে, তার চেয়েও পিনদ্ধ বিনয়। অতদূরে যেতে চেয়েছি কি? বলিনি তো?
যত ভালবেসেছো কবুল ছিল না কোনো।
এত এত আয়োজন ছিল। ছিল এক ভুবন জোড়া প্রেমিক। আজ সেই সুখকর হাসিগুলি তুলেছি তোরঙ্গে রঙ্গিন।
কার যেন মনের ব্যথা ককিয়ে ওঠে। কান্নার প্রতিধ্বনি মুছে নেয় সে।
এরপর তিনিও বৃক্ষতলে দাঁড়ান।
একবার ভুমি স্পর্শ করেন।
হাত স্পর্শ করেন। প্রলয় স্পর্শ করেন।
আমি ও ভাদরের শেষে বাদরে দেখেছি সঙ্গম পাহাড়ে পাহাড়ে। পবিত্র সময়ের পর ঢেকে যাবে পার বুনো ফুলে।
অন্ধকার মারিয়ে আমিও উঠে যাচ্ছি।
পাহাড়ের পাদদেশে মিশে যাচ্ছে অসংখ্য সাদা মেঘ।