শংকর ব্রহ্ম
বর্ষার লাবণ্যময় পরিবেশে কবিহৃদয় উদ্বেল হয়ে উঠেছে যুগে-যুগে। মায়াময় অলকাপুরীতে কবিমন বারবার ছুটে গেছে।
কালিদাস তাঁর ‘মেঘদূতে’ পর্বতের ওপারে নির্বাসিত শূন্য ও একাকী জীবনে ‘মেঘ’কে দূত করে পাঠিয়েছেন প্রিয়ার কাছে।
‘ও মেঘ, জানি আমি জাতকপত্রিকা, ভুবনবিখ্যাত পুষ্কর তোমার নাম জানি তোমার গুণপনা ইচ্ছামতো পারো উড়িতে
প্রধান ইন্দ্রের ও মেঘ, প্রিয়া দূরে, তোমার কাছে তাই প্রার্থী-
ক্ষতি কী গুণবানে বিফল হই যদি, অধমে গ্লানিময় যাচ্ঞা।’
– মেঘদূত (পূর্বমেঘ), অনুবাদ- শক্তি চট্টোপাধ্যায়।
জয়দেব মেঘমেদুর অম্বরের কথা বলেছেন। বৈষ্ণব কবিরা বর্ষার পরিবেশে রাধিকার বর্ষাভিসারের চিত্র এঁকেছেন।
‘ঘনঘন ঝনঝন বজর নিপাত’-বর্ষণ মুখর অন্ধকারে ‘এ ভরা বাদল মাহ ভাদর’-এর শূন্যতার ভেতর অনন্তের সন্ধান করেছেন।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতায় বর্ষা আবার ধরা দিয়েছে প্রকৃতির অপরূপ শক্তি হিসেবে। তাঁর কবিতায় বর্ষার প্রকৃতি ও মানব প্রকৃতি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। তাঁর ভাষায়-
” গভীর গর্জ্জন সদা করে জলধর,
উথলিল নদনদী ধরণী উপর ।
রমণী রমণ লয়ে, সুখে কেলি করে,
দানবাদি দেব, যক্ষ সুখিত অন্তরে।
সমীরণ ঘন ঘন ঝন ঝন রব,
বরুণ প্রবল দেখি প্রবল প্রভাব ।
হয় মেঘ, যদি ঝরে ফুল, বৃষ্টি। অলস পেন্সিল
স্বাধীন হইয়া পাছে পরাধীন হয়,
কলহ করয়ে কোন মতে শান্ত নয়।।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন –
‘এমন দিনে তারে বলা যায়
এমন ঘনঘোর বরষায়।’
‘আজি ঝরঝর মুখর বাদল দিনে জানিনে জানিনে
কিছুতে কেন যে মন লাগে না ঝরঝর মুখর বাদল দিনে।’
তিনি আরও বলেছেন –
‘বাদলা হাওয়ায় মনে পড়ে
ছেলে বেলার গান
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
নদে এল বান।’
আবার তিনি এ বর্ষাকেই বেছে নিয়েছেন প্রেমিকাকে প্রেম নিবেদনের উত্তম সময় হিসেবে-
‘এমন দিনে তারে বলা যায়
এমন ঘনঘোর বরিষায় -‘
অন্যদিকে, কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় বর্ষা ধরা দিয়েছে নানা প্রতীকী ব্যঞ্জনায়। কবিতায় নজরুল গেয়েছেন-
‘যেথা যাও তব মুখর পায়ের বরষা নূপুর খুলি
চলিতে চলিতে চমকে ওঠ না কবরী ওঠে না দুলি
যেথা রবে তুমি ধেয়ানমগ্ন তাপসিনী অচপল
তোমায় আশায় কাঁদিবে ধরায়, তেমনি ফটিক জল।’
তিনি আবার বলেছেন,
‘ওগো ও কাজল মেয়ে
উদাস আকাশ ছলছল চোখে তব মুখে আছে চেয়ে
কাশফুলসম শুভ্র ধবল রাশরাশ যেত মেঘে
তোমার তরীর উড়িতেছে পাল উদাস বাতাস লেগে
ওগো ও জলের দেশের কন্যা তবও বিদায় পথে
কাননে কাননে কদম কেশর ঝরিছে প্রভাত হতে
তোমার আদরে মুকুলিতা হয়ে উঠিল যে বল্লরী
তরুণ কণ্ঠে জড়াইয়া তারা কাঁদে দিবানিশি ভরি।’
জীবনানন্দ দাশ বর্ষাকে লিখেছেন-
‘এই জল ভালো লাগে;বৃষ্টির রূপালি জল কত দিন এসে
ধুয়েছে আমার দেহ- বুলায়ে দিয়েছে চুল- চোখের উপরে
তার শান-স্নিগ্ধ হাত রেখে কত খেলিয়াছে, আবেগের ভরে
ঠোঁটে এসে চুমো দিয়ে চলে গেছে কুমারীর মতো ভালোবেসে।’
পল্লী কবি জসিমউদ্দীনের কবিতায় বর্ষা এসেছে অন্যরকম ব্যঞ্জনা নিয়ে। তিনি উদাস হয়ে দেখেছেন বর্ষার রূপ। কবি বর্ষার অবিশ্রান্ত বর্ষণমুখর গ্রাম-বাংলার ঘরে ঘরে যে আড্ডার আসর বসে, সেই কিচ্ছা কাহিনী শোনার যে লোকায়ত চিত্র তা তুলে ধরেছেন, তার কবিতায়-
‘গাঁয়ের চাষীরা মিলিয়াছে আসি মোড়লের দলিজায়
গল্পের গানে কি জাগাইতে চাহে আজিকার দিনটায়!
বাহিরে নাচিছে ঝর ঝর জল, গুরুগুরু মেঘ ডাকে,
এসবের মাঝে রূপ-কথা যেন আর কোন রূপ আঁকে।’
অমিয় চক্রবর্তী বলেছেন –
‘অন্ধকার মধ্যদিনে বৃষ্টি ঝরে
মনের মাটিতে, বৃষ্টি ঝরে
রুক্ষ মাঠে, দিগন্ত পিয়াসী মাঠে
স্তব্ধ মাঠে, মরুময় দীর্ঘ তিয়াষার
মাঠে, ঝরে বনতলে, ঘন শ্যাম রোমাঞ্চিত
মাটির গভীর গূঢ় প্রাণে, শিরায়-শিরায়
স্নানে, বৃষ্টি ঝরে মনের মাটিতে।’
সুধীন্দ্রনাথ দত্ত বর্ষার আকাশকে প্রকাশ করেছেন চমৎকারভাবে। বর্ষায় আকাশের রঙ-রূপ বৈচিত্র্যে ভরপুর থাকে। মাঝেমধ্যে রংধনু ওঠে। আকাশে যেন বিভিন্ন বর্ণের মেঘের খেলা চলে। বিভিন্ন সময় মেঘের বিভিন্ন রূপ পরীলক্ষিত হয়। এ যেন আনন্দের সাজানো পশরা। আকাশে দিগন্ত বিস্তৃত ধূসর কৃষ্ণ মেঘপুঞ্জের ঘনঘটা সবাইকে মুগ্ধ করে, কাছে টানে অন্য এক অজানা আকর্ষণে। তিনি বলেছেন –
‘শ্রান্ত বরষা, অবেলায় অবসরে
প্রাঙ্গণে মেলে দিয়েছে শ্যামল কায়া;
স্বর্ণ সুযোগে লুকোচুরি খেলা করে
গগনে গগনে পলাতক আলো-ছায়া।’
বুদ্ধদেব বসু বর্ষায় মেঘের কষ্টের কথা ব্যক্ত করেছেন। কবির হৃদয়ে বর্ষার আবেদন গভীর। মেঘের বুকও কবির হৃদয়ের মতো দুরু-দুরু কেঁপে ওঠে। বর্ষার দিনে মনের গহিনে গুনগুনিয়ে ওঠে দিনের স্মৃতি। স্মৃতি রোমন্থন করাও বর্ষার দিনে একটি অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। দুঃখই যেন স্মৃতিপটে ভেসে আসে। কবি আবেগঘন কথা এভাবে ব্যক্ত করেছেন,
‘নদীর বুকে বৃষ্টি পড়ে
জোয়ার এলো জলে;
আকাশ ভরা মেঘের ভারে
বিদ্যুতের ব্যথা
গুমরে উঠে জানায় শুধু
অবোধ আকুলতা।’
শামসুর রাহমান বলেছেন –
‘শ্রাবণের মেঘ আকাশে আকাশে জটলা পাকায়
মেঘময়তায় ঘনঘন আজ একি বিদ্যুৎ জ্বলে
মিত্র কোথাও আশেপাশে নেই শান্তি উধাও
নির্দয় স্মৃতি মিতালি পাতায় শত করোটির সাথে।’
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন –
‘বাইরে বৃষ্টি, বিষম বৃষ্টি, আজ তুমি ঐ রুপালি শরীরে
বৃষ্টি দেখবে প্রান্তরময়, আকাশ মুচড়ে বৃষ্টির ধারা…
আমি দূরে এক বৃষ্টির নিচে দাঁড়িয়ে রয়েছি, একলা রয়েছি
ভিজেছে আমার সর্ব শরীর, লোহার শরীর, ভিজুক আজকে
বাজ বিদ্যুৎ একলা দাঁড়িয়ে কিছুই মানি না, সকাল বিকাল
খরচোখে আমি চেয়ে আছি ঐ জানলার দিকে, কাচের এ পাশে
যতই বাতাস আঘাত করুক, তবুও তোমার রুপালি চক্ষু-
আজ আমি একা বৃষ্টিতে ভিজে, রুপালি মানবী, দেখবো তোমার
বৃষ্টি না ভেজা একা বসে থাকা।’
মহাদেব সাহা লিখেছেন –
‘এই যে জীবন উজাড় করে বর্ষার মেঘের মতো
তোমাকে ভিজিয়ে দিচ্ছি
তুমি কখনোই তার কিছু অনুভব করলে না।’
মহাদেব সাহা তার প্রিয়তমাকে বৃষ্টিতে ভিজতে নিষেধ করেছেন। বৃষ্টিতে গলে যাবে মাধবী। তাই কবির এত উৎকণ্ঠা –
‘ঢাকার আকাশ আজ মেঘাচ্ছন্ন, মাধবী এখন তুমি বাইরে যেও না
এই করুণ বৃষ্টিতে তুমি ভিজে গেলে বড় ম্লান হয়ে যাবে তোমার শরীর
এ বৃষ্টিতে ঝরে যদি কারও হৃদয়ের আকুল কান্না, শোকের তুষার
গলে গলে যাবে এই বৃষ্টির হিমে তোমার কোমল দেহের আদল
মাধবী বৃষ্টিতে তুমি বাইরে যেও না
মাধবী তুষারপাতে বাইরে যেও না।’
শঙ্খ ঘোষ বলেছেন –
‘এখন বর্ষাকাল। দিন
প্রলম্বিত একটা বর্ষণ
আঁধারির স্তব্ধ আর মূক অনিঃশেষ
তা যাবতীয় দৃশ্য এবং উজ্জীবন
যথার্থ এবং অনিবার্য
একটি দৃশ্য এবং একটি উজ্জীবনের
নিশ্চয়তার দীর্ঘ দীর্ঘ অবসন্ন
অবসন্ন আর অতলান্তিক
আর চিরায়মান একটা বিস্তীর্ণতার
অর্থাৎ অনতিক্রমণীয় একটা বর্তমানের
শিকড়ের সঙ্গে যত সংশ্লিষ্ট
করতে চাইছে ততো প্রলম্বিত অনির্ভর
জলধারা ; ওই প্রান্তর, ওই
বাসভূমি, ওই সিক্ত গাভী
তার মন্থর আর একলক্ষ্য কন্ঠ
ঘনিয়ে তুলছে একটা শিখা—সাদা
আর অতিমানী আর ঘোষিত
ঠিক যেমন এপার–ওপার শ্রাবণমাস, তা
এমন একটা সংবেদন যা স্পষ্টতই
তামস অস্বীকার, উত্তপ্ত
নীল সরু শিখার মতো অভ্রান্ত —
এখন বর্ষাকাল আমরা প্রশ্নাতীত
সহানুভূতিশীল, আমরা
যত আকন্ঠ নিমজ্জিত তত অনিবার্য
সেই বর্তমান— বর্তমান ব্যতীত
আর কিছুই নয়,কেবল
নিঃসংশয় একটা বর্তমান —ভেজা শালিক পাখি
নিমগাছের কাক,ঘরের কোণের চড়ুই
অবিসংবাদিত এই বর্তমান
আর সেই শিখা উত্তপ্ত অভ্রান্ত অশ্রুসজলতা।’
বিনয় মজুমদারের ভাষায় –
‘বর্ষাকালে আমাদের পুকুরে শাপলা হয়, শীত গ্রীষ্মে এই
পুকুর সম্পূর্ণ শুষ্ক হয়ে যায় পুকুরের নিচে ঘাস গজায়,তখন–
পুকুরে শাপলা আর থাকে না, আবার সেই বর্ষাকাল আসে
তখন পুকুরটিতে জল জমে পুনরায় শাপলা গজায়।
এই হলো শাপলার কাহিনী, শাপলা ফুল শাপলার পাতা
ছন্দে ছন্দে দুলে যায়, অনুপ্রাস, চিত্রকল্প ইত্যাদি সমেত।
এবং পুকুরটিও চিন্তাশীল, সৃষ্টিশীল, পুকুরের আনন্দ বেদনা
পাতা হয়ে ফুল হয়ে ফুটে ওঠে পৃথিবীতে, এই বিশ্বলোকে।
শাপলার ফুলে ফুলে পাতায় কখনো মিল থাকে, মিল কখনো থাকে না।’
শামসুর রাহমানের কবিতায় বর্ষা –
‘টেবিলে রয়েছি ঝুঁকে, আমিও চাষীর মতো বড়
ব্যগ্র হয়ে চেয়ে আছি খাতার পাতায়, যদি জড়ো
হাতে, বকমার্কা। পাতা জোড়া আকাশের খাঁ খাঁ নীল।’
কবি আল মাহমুদ বর্ষাকে দেখেছেন অন্য এক দৃষ্টিকোণ থেকে। তাঁর কবিতায় বর্ষা-প্রকৃতি অন্যমাত্রার কথা বলে। তিনি কবিতায় বলেন,-
‘শুধু দিগন্ত বিস্তৃত বৃষ্টি ঝরে যায়, শেওলা পিছল
আমাদের গরিয়ান গ্রহটির গায়।’
নির্মলেন্দু গুণ বর্ষার মেঘ আর বৃষ্টি দুটিকেই ধারণ করেছেন বোধের ভেতরে। চাকুর এপিঠ ওপিঠের মতো ব্যবহার করেছেন জাগ্রত প্রতিবাদে, বর্ষাকে উপমা করেছেন রক্তকণ্ঠের প্রতিনিধি হিসেবে-
‘আমি কতো ভালোবাসা দু’পায়ে মাড়িয়ে অবশেষে,
কল্পনা মেঘোলোক ছেড়ে পৌঁছেছি বাস্তব মেঘে।
আজ রাত বৃষ্টি হবে মানুষের চিরকাম্য দাবির ভিতরে।’
সৈয়দ শামসুল হক বর্ষাধারাকে পবিত্র এক জলফোয়ারা রূপে দেখেছেন। বৃষ্টিতে ধৌত হলে পৃথিবীর আর কোনো জলে ধৌত হওয়ার প্রয়োজন নেই বলেই বর্ষার এ বৃষ্টিতে ভেজা প্রাণের স্বদেশকে স্বাগত জানিয়েছেন-
‘তোমাকে অভিবাদন বাংলাদেশ,
তুমি ফিরে এসেছ তোমার বৃষ্টিভেজা খড়ের কুটিরে
যার ছায়ায় কত দীর্ঘ অপেক্ষায় আছে সন্তান এবং স্বপ্ন;’
হুমায়ূন আহমেদের বর্ষা লোভের কথা বলে কে না জানে! সমুদ্রের কাছে গেলে এই গীতিকবি যেমন হুলুস্থূলের পাগল হয়ে যেতেন, তেমনি মাতাল হয়ে যেতেন বর্ষার রূপ দেখে। যে প্রিয়াকে ভালোবাসতেন প্রাণাধিক, সে প্রিয়তমাকে তাই তিনি অন্য কোনও ঋতুতে নয়,বর্ষা ঋতুতেই আসতে বলেছেন –
‘যদি মন কাঁদে
তুমি চলে এসো,চলে এসো
এক বরষায়।
মোহাম্মদ নূরুল হুদা তাঁর কবিতায় বর্ষাকে প্রকাশ করেছেন –
‘বৃষ্টি পড়ে বৃষ্টি পড়ে মনে মনে বৃষ্টি পড়ে
বৃষ্টি পড়ে বৃষ্টি পড়ে বনে বনে বৃষ্টি পড়ে
মনের ঘরে চরের বনে নিখিল নিঝুম গাঁও গেরামে
বৃষ্টি পড়ে বৃষ্টি পড়ে বৃষ্টি পড়ে বৃষ্টি পড়ে।’
শ্রীজাত বলেন –
‘যখন বৃষ্টি নামল
তুমি দেশান্তরী আমলকী নাও হাতে…
পুঞ্জছায়ায় অঞ্জন
এল অন্ধ মেঘে খঞ্জনি বাজাতে।
ভিক্ষে করেই যায় দিন
তুমি শ্রান্ত মনে সায় দিলে না তবু
এ বর্ষা প্রাবন্ধিক।
দ্যাখো লেখার পরে কোনদিকে যায় সবুজ,
আমিই তোমার ডাকনাম
এই নকশাকাটা পাখনাতে দিই উড়াল
পুনর্বাসন ঝঞ্ঝা
জানি ভালইবাসে রঞ্জাকে, বন্ধুরা।
মেঘের মতো মিথ্যে
কেন মরতে এলাম শীত থেকে, বর্ষাতে
যখন বৃষ্টি নামল
তুমি দেশান্তরী আমলকী নাও হাতে… ‘
কবীর হুমায়ূন বলেছেন –
‘যখন ছিলো না কাগজ-কলম প্রেমের কবিতা লিখতে,
তখন আকাশে লিখতো কবিতা বর্ষায় কিংবা শীতে।
কবিতা হয়েছে ভালোবাসা তার- বর্ষা-জলের বৃষ্টি,
অমর প্রেমের কবিতাসমূহ আকাশে হয়েছে সৃষ্টি।
আজি এ বাদলে ভরেছে আকা একা রই বলো কিভাবে?
বাদলের দিনে আনচান মনে ভাবছি প্রিয়তি কি চাবে?
বাদল ঝরেছে কাঁদেনিকো প্রাণ বৃষ্টিজলের ভিড়ে,
বিরহ ব্যথার মুরলী বাজেনি জীবন নদীর তীরে;
এমন কবি কি বাংলাতে আছে প্রিয়জন ছাড়া, প্রিয়তি!
বাদলের দিনে এসো যদি তুমি, বলো হে, এমন কি ক্ষতি?’
শংকর ব্রহ্ম “ক্ষীণ প্রতিচ্ছবি”-তে বলেন –
‘সারাদিন বৃষ্টি পাত
সারা রাত
তোমার মুখের রেখা
ভিজে যায় জলে।
তবুও অস্পষ্ট কিছু
জেগে থাকে
উদাসীন হলে।
ডালিম দানার মত
দাঁতের গোপন ধার
কামড়ে ধরে
বুকের গভীরে।
সারা রাত বৃষ্টিপাত
সারা দিন
তোমার মুখের ক্ষীণ প্রতিচ্ছবি
জেগে থাকে আমার ভিতরে। ‘
বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ থেকে মধ্যযুগ পার হয়ে আধুনিক যুগ পর্যন্ত বহু কবি বর্ষা নিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বহু কবিতা লিখেছেন।
[ তথ্য সংগৃহীত ও সম্পাদিত। সূত্র – অন্তর্জাল। ঋণস্বীকার – কবীর হুমায়ূন ও শাহরিয়ার সোহেল। ]