কবিতা: কাজী নজরুল ইসলামকে
শ্রদ্ধাঞ্জলি
কাজী নজরুল ইসলামকে
শ্রদ্ধাঞ্জলি
বিদ্রোহী কবি, এটুকুই শিরোনাম!
সাম্যের গানে অপরাজিত সৃষ্টিতে মহীয়ান।
মানুষে মানুষে হানাহানি দেখে সিক্ত হৃদয় তখন
মন্দির আর মসজিদ জুড়ে তর্ক ধকল যখন
পাণ্ডুর চাঁদ মলিন সেদিন বুলবুল যবে শান্ত
শোকের অশ্রু নির্মম তবু,, হয়নি কলম ক্লান্ত।
বিদায়ের সেই মহৎকর্মে বনে বনে কাঁদে পাখি
অগ্নিবীণার হৃদয় জুড়ে প্রয়াসে ছিল না ফাঁকি।
“স্বপ্নে দেখেছি ভারত জননী তুই যেন রাজ রাজেশ্বরী”
করেছো সৃজন দুই আঁখি ধারা সাম্যের বিভাবরী
শুদ্ধ ফুলের ঘ্রান বিকিরণে সাজিয়েছো মহীয়ান
“মুসলিম তার নয়ন -মনি, হিন্দু তাহার প্রাণ”।
ওগো যুগবাণী জাগর- তুর্য, বহ্নি শিখার স্পর্শ
ঘোর নিশীথের মৃত্যুঞ্জয় বিকশিত নব হর্ষ।
ভ্রান্ত জাতির গোঁড়ামি মোছাতে মনুষ্যত্বের সভা
কান্ডারী তুমি বিভূতি কার্ফা অরুণ কিরন প্রভা।
মানবতার ভূষণে ভুষিত হিন্দোলা গৌরব
মজ্জা রক্তে বিবেক তন্ত্রে কুসুমিত সৌরভ।
কিছু না কিছু খুঁজছে মানুষ, শহর, গঞ্জ, গ্রামে
শিখছে যারা পুবের আলো নিচ্ছে মেখে ঘামে।
হঠাৎ কখন ঝঞ্ঝা এলো, কাফের, যবন মেলা
আপোষ ভুলে নামলো মাঠে, মেজাজী যুদ্ধ খেলা
নয় উচাটন নয় সমাপন যাচ্ছে ভেসে মোহোনায়
প্রজাপতি উড়ছে পথে মঞ্জুরিত সুরধায়
ঊষার আলো ব্যাকুল বাতাস বকুল মুঠি যায় ছড়ায়ে
যাচ্ছে ডিঙি মাতোয়ারা ফাগুন ঢঙে শান্তি ছায়ে।
সেই অপরূপ রূপের কুমার চির উন্নত শির
শত জনমের বঞ্চিত সুধা উত্তরণের বীর।
শুভ সুন্দর শ্রেয় মনোহর শোক বেদনার অশ্রুধার
সঞ্চিতা সেই লকেট খানি অভিজ্ঞতার বংশীধর।
যমুনার ওই নীল বাহারী অভয় হাসি তার গুনগান
বিশ্বজয়ী ত্রিভুবনে তপস্যাতে হে পরিত্রান।
একই বৃন্তে প্রমীলা দেবী নজরুল ইসলাম
মহতী আকাশে বিজয়ী সাম্য শ্রেষ্ঠ ধরাধাম।
আজিও বাতাসে দুষিত হুতাশে বিদ্বেষ ঝরে পড়ে
তারাও বাঁচেনা বুঝতে চায়না পোড়ায় এবং পোড়ে।
রিক্ত বক্ষে আজ তোমাকে দেবো একমুঠো মাটি
করবো উজাড় হৃদয়ের গানে সুর রাঙা বনবীথি।
সেই পরাভবে ওঠে যদি ফুটে সিক্ত রক্ত কুঁড়ি
জয়ের প্রসাদে হবে সে আহুতি যজ্ঞের গাঁথা নাড়ি।
সিক্ত মুক্ত শোণিত বিকাবো ভক্তির নিবেদনে
ভক্ত আমি পূর্ব পূষার ছায়া মোছা অবদানে।
শ্রদ্ধা এবং শুভকামনায় ছন্দের বুলবুল
প্রবর্তকের কান্ডারি, যুগ কবি নজরুল।।