পাবনা, বাংলাদেশ থেকে কবি আদ্যনাথ ঘোষের ৫ টি কবিতা: - শৃণ্বন্তু পাবনা, বাংলাদেশ থেকে কবি আদ্যনাথ ঘোষের ৫ টি কবিতা: - শৃণ্বন্তু
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

পাবনা, বাংলাদেশ থেকে কবি আদ্যনাথ ঘোষের ৫ টি কবিতা:

আপডেট করা হয়েছে : সোমবার, ৩ জুন, ২০২৪, ৯:২৪ পূর্বাহ্ন

পাবনা, বাংলাদেশ থেকে কবি আদ্যনাথ ঘোষের ৫ টি কবিতা: 

কবি আদ্যনাথ ঘোষ


১. বিবর্তন
আস্থাকে আড়াল করে-
রোদের আকাশ ভাঁজ করে রেখে- 
আঁধারের নকশায়,
কষ্টের রুমাল এঁকে- 
উল্টোপথের নির্জন ইশারায়-
কৃষ্ণচূড়ার উন্মাদ রঙের পাখায়, 
যে সুর ভাসে- মুখরিত রোদকে 
জিম্মি করে, অন্ধপথের উন্মুখ প্রতীক্ষায়-
আজ দেখি- ক্ষুধার্ত শরীর নিয়ে,
মানুষ অনবরত তেড়ে আসে- 
বিশ্বাসের বিপরীতে।
ঠিক! চক্রব্যূহের মতন-
আলোর বসন্ত খেয়ে- বিষণ্ন রাতের কোলে। 
২. জোনাকির মৃতদেহে
পুরানো পথের প্রান্তে পড়ে থাকি সারাটা জীবন।
অথচ নতুনের কাছে কতো কাটিয়েছি দিন
ভরা যৌবনের নীল যমুনায়।
আজ কেন হাপিত্যেশ করো, ওরে-ও মনের ফাগুন।
তোমার আসার প্রান্তে এসেছিল ঝুমঝুম বৃষ্টি, কতো পাখি,
আর কতো উত্তাল মেঘ, কতো প্রজাপতি আর কতো শাপলা শালুক।
যতোদিন তুমি থাক আমার মনের ভিতর
ততোদিন আমার ভেতরে আমিও যে আছি; ভেতর বাহির,
বুঝাতে কি পার নাই? মনোলোভা চিত্রল হরিণের বিষণ্ন জীবন।
নিশিরাত কেটে গেলে পড়ে থাকে জোনাকির মৃতদেহ।
আমিও যে হতে চাই জোনাকির মতো, 
হতে চাই বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা; 
বকুল ও পলাশের চোখে চোখ রেখে ফেলে দিয়ে অনন্ত জীবন।  
হাতে নিয়ে ভোরের নদী, বুকে নিয়ে রোদের পরশ 
একদিন মিশে যাব আমার পথ ঘাট, মাঠ-নদীর ধুলোর সাথেই।
৩. সম্পাদ্য
এখনও আঁধারের শরীর ছুঁয়ে মানুষ আঁধারেই ডুবে যেতে চায়। 
যে মানুষ হৃদয়ের মাঝে তুলে রাখে আলোর দেহখানি।
সে কিনা অনিবার্যভাবেই আঁধারকে বুকের ভেতরে 
কাছে ডেকে নেয়। যেমন পুষে রাখে মা তার সন্তানের মুখ,
তেমনই হাতড়ে চলে সংসারে একাকী জ্যামিতিক চিত্ররেখায়। 
দ্রুত পায়ে হেঁটে চলে আঁধারের সিঁড়িতে- 
যে সিঁড়ি খইফোটা মুখের চিবানিতে পড়ে থাকে শোকের অক্ষরে।
অতি দ্রুত রংধনু রঙে ভেসে ওঠে প্রিয়ার খোঁপায়।
আলো আর আঁধারের গোপন চুক্তির অনন্ত চলার পথে-
ভাসিয়েছে মানুষ নৌকোয়, সংসারের অলিখিত বিধি আর বিধান। 
তবু কিনা মানুষ, মনের ভেতরে পুষে রাখে আলোর আসর, 
আর মনে মনে ভাবে, ভুল যেন ফুল হয়ে ফুটে ওঠে হৃদয় কোণায়।
৪. শিল্পলিপি 
অর্ধেকটা রেখে দিয়ে বাকি অর্ধেক উনুন জে¦লে
অসমাপ্ত রাখিনিতো জল মাটি হাওয়া।
যতই লিখি ছাইলিপি- যতই লিখি জললিপি
কীভাবে যে লিখে ফেলি শিল্পলিপি মন!
আমার তোমার দেখা হলে
মাটি থেকে দেহ; 
দেহ থেকে জল হাওয়া, ভেসে চলে রোদ।
কেমন করে জীবন চলে, কেমন মনের গতি
মানুষ যেমন কালি ও কলম
লিখে চলে ফুলে ফলে গোলাপ দুপুর ভরি-
তৃষ্ণাকাতর গলুই।
৫. পোড়া রাত ও তৃষ্ণার জল
আমার ভরাট নদী 
খালি হয় শুধু ভোর বিহান বেলায়।
জেগে থাকে একটি পাখি অনিমেষ চোখে
অতীত বিস্মৃত ধূমে 
আড়িপাতা চাঁদে।
এখানে ঘুমহীন রাত জাগে-
জাগে নদীজল- চোখে ভোর ও সকাল।
শুধু প্রতীক্ষায় বসে থাকে
পোড়া রাতের হৃদয়- ভস্মভোর।
রাতের কঙ্কাল এসে 
পোড়াকাঠ জ্বালে 
পুড়ে যায় শস্য মাঠ, সবুজ বাতাস
আর পোড়ে আকাশের বুক
জোছনা মাখা দুপুরের 
চোখের নূপুর।
তবুও ভররাত জাগে 
ভোরের শরীর-
পাখির পালক সাথে নিয়ে 
প্রতিদিন ডানা মেলে শস্য রেখে যায় 
দহন বাতাস।
আমিও তৃষ্ণার জল চেয়ে 
দরজায় বসে থাকি সকাল ডানায়।
_____________________________
আদ্যনাথ ঘোষ 
শালগাড়ীয়া (গোডাউন পাড়া), 
ডাকঘর: পাবনা, উপজেলা ও জেলা: পাবনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগ থেকে আরোও
Theme Created By FlintDeOrient.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!