তিনটি কবিতা:
১. অমাবস্যায় চাঁদের খোঁজে
অমাবস্যার এই আঁধার রাতে;
অমৃত মেঘ থেকে কেমন ঝরছে বারি।
চল্ না রে…আজ নাহয় আমরা একটু-
চাতক স্বভাব ধরি।
সাগর পাড় আজ ভাসছে জোয়ারে;
ইড়া পিঙ্গলায় চলছে শ্বাসের লহরী।
চল্ না রে…আজ নাহয় আমরাও একটু-
উড়াই প্রেমের ঘুড়ি।
শ্যামের বাঁশি বাজছে কী সুরে;
সুরের মূর্ছনাতে ঘুমায় রাতের প্রহরী।
চল্ না রে…আমিই নাহয় আজকে হলাম-
তোর হাতের বাঁশরী।
চাঁদ সূর্যের এই মধুর মিলনে;
আঁধারে ডুবেছে আজ যেন মায়া নগরী।
চল্ না রে…অমাবস্যায় আজ সারারাত-
চাঁদের খোঁজ করি।
২. যোগ-বিয়োগ
বিয়োগে বিয়োগে শূন্য হতে গিয়ে বারবার শুধু
ভুল অঙ্ক কষে যাও। না অঙ্ক মেলে না শূন্যতা।
কেউ তোমার না কিছুই তোমার না, এ বিয়োগ।
তুমি সবার সবকিছুই তোমার, এ হলো যোগ।
বিয়োগে তুমি শুধু বিচ্ছিন্ন হয়েছো; প্রেম থেকে
প্রকৃতি থেকে মানুষ থেকে, কিন্তু শূন্য হওনি।
এবার তুমিই বলো, বিয়োগে বিয়োগে আজীবন
ভুল অঙ্ক কষে যাবে নাকি যোগে যোগে শূন্য হবে?
প্রেম দিয়ে একবার যুক্ত হয়ে দেখো, বৃষ্টির সাথে
অথবা রোদের সাথে। দেখবে, তুমিই বৃষ্টি হয়ে
ঝরছো অথবা রোদ্দুর হয়ে ঝিকমিক করছো।
দেখবে, প্রেম দিয়ে যুক্ত হলে সব কেমন তোমাতে
বিলীন হয় আর তুমি সবেতে। না থাকবে কোনও
বৈষম্য না বিভেদ। শুধু একটি মাত্র অস্তিত্ব; তুমি।
৩. গন্ধম ফুল
নীলকণ্ঠ পাখি…
তোমার খোঁজে গহিন অরণ্যে,
কুড়িয়েছি কত পাখির পালক।
নিশিগন্ধা কামিনীর মতো কতবার
খসে পড়েছে আমার শাড়ির আঁচল।
তোমার জন্য নূপুরের শেকল খুলে,
পা বাড়িয়েছি গোপন অভিসারে।
তপস্বিনী থেকে কলঙ্কিনী হয়েছি ,
শুধু তোমার সম্মোহনে ভেসে।
সুষুপ্তির পর সুষুপ্তি জড়ো করে,
দু’চোখে স্বপ্নের প্রাসাদ গড়েছি।
লোনা জলে প্রাসাদ ভেঙেছে,
আবার গড়েছি একটু একটু করে।
তোমার জন্যই সবকিছু ভাঙি,
ভেঙেচুরে নতুন করে গড়ি।
নীলকণ্ঠ পাখি…
তুমি যে আমার অতিপ্রিয় ভুল,
নিষিদ্ধ গন্ধম ফুল।