কবি পম্পা ঘোষের একগুচ্ছ কবিতা।।
১. জেনেছি তোমায়
দেখতে গেলাম ইছামতি
স্বল্প সময় ব্যয়ে,
বিভূতিভূষণ যেখানে ছিলেন
আম কাঁঠালের ছায়ে !
অপু দুর্গার কথা কাহিনী
হৃদয়েতে আছে জাগি ,
ইন্দির ঠাকরুনের কষ্ট কথা
বিলীন করতে বর মাগি।
বনস্পতির ছায়ায় ঘেরা
তোমার সবুজ গ্রাম,
“পথের পাঁচালী ” সবার সেরা
আসেনা অন্য নাম ?
তোমার সৃষ্টি অপূর্ব” আরণ্যক “
ভরায় হৃদয় আকাশ,
তোমার সৃষ্টি মিটিয়েছে সাধ
না পাওয়া সেই আশ্বাস।
গভীর ভাবনায় চরিত্র গুলো
সাজিয়ে ধরেছো তুলে,
কতটা অনুভব হয়েছিল তোমার
যাইনি আজও ভুলে।
২. আলোর পথে
রামমোহন বিদ্যাসাগর তোমরা
এসেছিলে এই ধরায়,
আবার তোমাাদের আসতেই হবে
বহিয়া প্রাণের ধারায়।
কি দোষ করেছি আজকে আমরা
কেন থাকবো তোমাদের ছাড়া
তোমাদের দেখানো পথে কী করে চলি
আমরা যে তুমি হারা।
মেটাতে অক্ষম বিশ্বের দাবী
পাই না কোন মুক্তির চাবি,
আকাশে বাতাসে স্থলে জলে
কেনো আঁধার দেখি সবি?
অবক্ষয় সন্ত্রাস চারিদিকে দেখি
যন্ত্রণা কুঁড়ে খায় অহর্নিশ
চারিদিকে দেখি ছড়ানো ছেটানো
নানান রকম বিষ।
সতীদাহ রোধে রেখে হাতে হাত
যত্নে করেছ পরিপাটি
ভেঙে দিয়েছো মনের গ্লানি
এখন সবই হচ্ছে মাটি।।
৩. শুধু চেয়ে থাকা
তুমি হয়তো কোনদিন কপটতার ছলে
আমার ভালবাসাকে উড়িয়ে দিতেই পারো।
পারোতো?
তবে কেনো জানিনা ভালবাসার গভীরতায় অবজ্ঞটা ঠিক আসে না।
সামনে হয়তো তোমার অনেকে এসেছে
ভালো হয়তো অনেককেই লেগেছে।
মনটাকে কেউ ছুঁতে পেরেছে আমার মতো করে।
জানিও তাহলে আমায়?
আটকে রাখবো না কোনো বন্ধনে……..
৪. অজানা অন্ধকারে
যেদিন তুমি চলে গেলে
জানি আমার জীবন নদী স্তব্ধ হয়েছিল,
তোমার মুঠোয়
স্নেহের স্পর্শ পাওয়ার লোভে
ধরতে চেয়েছি চেপে।
সেই অঙ্গীকারবদ্ধ হাত
সাড়া দেয়নি সেদিন,
সে হাত বরফের মত শীতল
চারিদিকে শান্ত ধূপের ধোঁয়া
রক্তে ভিজে মুখ -মৃদু কলরব।
তোমাকে নিয়ে যাওয়া হল শ্মশানঘাটে
খেয়া নৌকো গুলো এসেছে চরের খুব কাছে।
নীরবে পা ধুয়ে জলে একবার
তারপর দূরে সরে আসি।
চলে যায় আঁধারে তবু জানি -কোনদিন পৃথিবীর পথে
ফিরবে না তুমি।
হারিয়েছি তোমাকে
জানা হলো না অনেক অজানা কথার উত্তর।