দু:স্বপ্নের অবাধ্য বাগান
ঠোঁট সেলাই করে দিলেও, কথা বলে যাও
কলম ছিনিয়ে নিলেও, আছে লাল কালি
পাঁজরের অলিন্দে বাজে কালের কল্লোল ,
এসো ফের, মৌনতাকে শোনাই গজল।
এখানে সব চোখের নীচে অশ্রু টলমল
এখানে চোয়ালের নীচে আগুনের বিস্তার
এখানে সবাই খুশির খরিদ্দার হতে চায়,
এখানে সবাই যেতে চায় আনন্দের ঘরে ।
এখানে ইচ্ছার মেঘে নেমে আসে অসুখ
এখানে আকাঙ্খারা রাত্রি জেগে জেগে
পাহারা দেয় দু:স্বপ্নের অবাধ্য বাগান।
কেবল কিছু সারমেয় মাঝে মাঝে কাঁদে।
নিষিদ্ধ নগরীর রঙে উথলে ওঠে নদী
সৈকতের প্রসাধন মুছে দেয় নোনাজল ,
এখানে ঢেউয়ের রঙিন ফেনা চিরে
বেরিয়ে আসে ভাঙ্গাচোরা জীর্ণ কঙ্কাল।
তুমি এই ভাদ্রের ভীড় ঠেলে বেরিয়ে এসো
তুমি ওই ছায়ার থেকে রোদ্দুরে এসো,
এখানে কে কাকে দেবে নরম রোদ্দুর ?
এসো, পাশাপাশি হেঁটে যাই আরো কিছুদূর।
প্রাসাদের হিমঘর, ঘুমঘর ছেড়ে এসো
জাগরণের উত্তাপে উকি দিক নতুন সকাল
এসো পেরিয়ে যাই এই নির্মমতার গোরস্থান
এসো পার হই, দু:স্বপ্নের প্রাচীন দেওয়াল !
এখানে কপাল রক্তাক্ত করেছে কত মাথা,
রক্তের প্রতি ফোঁটা আবীরের দরে বিক্রি হয়,
প্রদীপের বদলে বস্তি পুড়ে যায়, রোজ
হৃদয়কে জ্বালাবে এমন হরিণী কোথায় ?
পরিচিত ঋতুর সাথী ঘুরে ফিরে আসে
সুবিধামত খুলে নেয় প্রাণের বাকল ,
এখানে বসন্তকাল বিক্রি হয় বণিকের পাল্লায়
শরতের শর্তাবলী লুটে নেয় হেমন্তের মাঠ।
দিনশেষে, কাকতাড়ুয়া দাঁড়িয়ে থাকে একা
নীলজ্যোৎস্নার ওড়না খোলে শঙ্খীনির হাত
গম্বুজের শীর্ষ কাঁপে শহীদ মিনারের আজানে
অপেক্ষার সাদা চোখে রঙ ভরে নতুন প্রভাত।